কান দিয়ে মানুষ যেমন শোনে তার সাথে সাথে কান আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও করে। আর সেটি হলো ভারসাম্য রক্ষা করা। তাহলে আমরা জানতে পারলাম কান এর কাজ হলো শ্রবন ও ভারসাম্য রক্ষা করা।
আজ আমি সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করব আমরা কিভাবে কান দিয়ে শুনি। কানে শুনা একটি অতীব জটিল ফিজিক্স।
- শব্দের ভিত্তি
- শব্দ তরঙ্গ,
- কম্পাংক,
- শব্দের বেগ,
- সময়,
- তরঙ্গ দৈর্ঘ্য।
শব্দ প্রেরণের মাধ্যমঃ
বায়ুর চাপ অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে শব্দ রুপান্তরিত হয়।শব্দ তরঙ্গ এর প্রধান মাত্রা হলো শব্দের কম্পাংক, শব্দের তীব্রতা এবং সময় শব্দের প্রধান মাত্রা তিনটি ককলিয়ার মাধ্যমে শনাক্ত ও অগ্রগমণ হয়। কর্ণ একটি শ্রবণ ও ভারসাম্য রক্ষাকারী অঙ্গঃ
- কর্ণ তিনটি অংশে বিভক্ত
- বহিঃকর্ণ
- মধ্যকর্ণ
- অন্তঃকর্ণ।
ধাপে ধাপে শব্দ প্রেরন সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল।
বহিঃকর্ণ
পিনা বা অরিকল –
এটি মাথার দুই পাশে অবস্থিত ও তরুনাস্থি, নির্মিত বাহিরের প্রসারিত অংশ। পিনা শব্দ তরঙ্গ সংগ্রহ ও কেন্দ্রিভূত করে বহিঃঅডিটরি মিটাস বা কর্ণকূহরে প্রেরণ করে।
বহিঃঅডিটরি মিটাস বা কর্ণকূহর
পিনার কেন্দ্রে কানের বহিঃছিদ্র থেকে সরুনালিপথ টিমপেনিক পর্দা পর্যন্ত বিস্তৃত।
কর্ণকূহরের মাধ্যমে শব্দ তরঙ্গ লম্ব ভাবে টিমপেনিক পর্দায় পৌঁছায়।
টিমপেনিক পর্দা বা কর্ণপটহ
বহিঃঅডিটরি মিটাসের শেষ প্রান্তে এবং মধ্যকর্ণের মুখে আড়াআড়ি ভাবে অবস্থিত।
টিমপেনিক পর্দা ডিম্বাকার আকৃতির এবং স্থিতিস্থাপক।
এর সাথে মধ্য কর্ণের ম্যালিয়াস অস্থি যুক্ত থাকে।বহিঃকর্ণকে মধ্যকর্ণ থেকে
পৃথক রাখে,শব্দ তরঙ্গে কেঁপে ওঠে এবং শব্দ তরঙ্গ কে সমতলে মধ্যকর্ণে পরিবহন করে।
মধ্যকর্ণ
ইউস্টেশিয়ান নালি- টিমপেনিক পর্দার উভয় পাশের বায়ুর চাপ সমান রেখে টিমপেনিক পর্দাকে ফেঁটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
কর্ণাস্থি –মধ্যকর্ণের গহব্বরে অবস্থিত ৩ টি ছোট অস্থি।ম্যালিয়াস,ইনকাস, স্টেপিস,অস্থি গুলো বহিঃকর্ণের টিমপেনিক পর্দা থেকে শব্দ তরঙ্গ অন্তঃ কর্ণের অভ্যন্তরে পেরিলিম্ফে বহন করে।
ছিদ্রপথ – মধ্য কর্ণের প্রাচীরে দুটি ছিদ্র পথ থাকে। উপরের ডিম্বাকার ছিদ্রকে ফেনেস্ট্রা ওভালিস এবং নিচের দিকের
গোল ছিদ্রকে ফেনেস্ট্রা রোটান্ডা বলে ।*ফেনেস্ট্রা ওভালিসঃ
এর মাধ্যমে শব্দ মধ্যকর্ণ থেকে অন্তঃকর্ণে প্রবেশ করে।
শব্দ তরঙ্গ ককলিয়ায় প্রবেশের পর অবশেষে ফেনেস্ট্রা রোটান্ডার মাধ্যমে বাইরে চলে আসে।
অন্তঃকর্ণ
অন্তঃকর্ণের প্রধান অংশ হলো মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ এর অভ্যন্তরে এন্ডোলিম্ফ নামক তরল পদার্থ থাকে।
অস্থিময় ল্যাবিরিন্থ দ্বারা মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ পরিবেষ্টিত থাকে।দুই ল্যাবিরিন্থের মধ্যবর্তী স্থান পেরিলিম্ফ তরল
তরলে পূর্ণ থাকে। মেমব্রেনাস ল্যাবিরিন্থ ভারসাম্য ও শ্রবন অঙ্গ নিয়ে গঠিত। ভারসাম্য অঙ্গ কে ভেস্টিবুলার
অ্যাপারেটাস বলে, এটি ইউট্রিকুলাস ও স্যাকুলাস নামক দুটি ছোটো গহ্বর ও তিনটি অর্ধবৃত্তাকার নালির সমন্বয়ে গঠিত।
ইউট্রিকুলাস ও স্যাকুলাস এন্ডলিম্ফ তরলে পূর্ণ থাকে।
ককলিয়া তিনটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত। স্ক্যালা ভেস্টিবুলি,স্ক্যালা মিডিয়া ও স্ক্যালা টিমপেনি। ককলিয়ায় বাহির হেয়ার কোষ
ও ভিতর হেয়ার কোষ বিদ্যমান।কিছু এপিথেলিয়াল কোষ রূপান্তরিত হয়ে অর্গান অব কর্টি গঠন করে। ককলিয়া শ্রবণ উদ্দীপনা গ্রহন এবং স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে।
- শব্দ তরঙ্গ
- পিনায় বাধা
- কর্ণ কূহরে প্রবেশ
- টিমপেনিক পর্দায় কাপন
- মধ্যকর্ন
(ম্যালিয়াস,ইনকাস,স্টেপিস)
- ফেনেস্ট্রা
- ওভালিস
- ককলিয়া
- পেরিলিম্ফ
- এন্ডোলিম্ফ
- অর্গান অব কর্টি
- সংবেদী কোষে উত্তেজনা
- কক্লিয়ার স্নায়ু
- স্নায়ু স্পন্দন মস্তিষ্কে
- প্রেরণ
- শ্রবণ।
অতএব তুমি তোমার রবের কোন কোন নেয়ামতকে অস্বীকার করবে?
-আল কোরান
ডাঃ মশিউর রহমান
নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ
খিদমাহ হাসপাতাল, ঢাকা।